আলোচিত চিত্রনাট্যকার এবং সংলাপ লেখক শাহজাহান সৌরভ

আলোচিত চিত্রনাট্যকার এবং সংলাপ লেখক শাহজাহান সৌরভ

অনলাইন ডেস্ক :

এবার ঈদে রিলিজ পাওয়া তিনটি সিনেমার মাঝে এখন পর্যন্ত বক্স অফিসে এগিয়ে আছে রায়হান রাফি পরিচালিত ‘পরাণ’। সাধারণ দর্শকদের ভালোবাসার পাশাপাশি দেশের তারকাদের শুভেচ্ছা এবং প্রশংসায় ভাসছেন পুরো ‘পরাণ’ টিম। আর এই টিমের অন্যতম স্তম্ভ হলেন সিনেমার সহ চিত্রনাট্যকার এবং সংলাপ লেখক শাহজাহান সৌরভ।

বরগুনায় ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনা অবলম্বনে ত্রিভুজ প্রেমের ‘পরাণ’ ট্রেলার, গান রিলিজের পরে যে আগ্রহ জাগিয়েছিলো তা পরিপূর্ণতা পায় সিনেমায় নির্মাণ মুন্সিয়ানা, অভিনয় শিল্পীদের দক্ষতা এবং যুতসই চিত্রনাট্য এবং জমজমাট সংলাপের উপর ভর করে। সাথে বোনাস হিসেবে সিনেমার প্রতিটা গানের জনপ্রিয়তা দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে টেনে নিয়ে গেছে একথাও সত্য। যারা ‘পরাণ’ প্রেক্ষাগৃহে দেখেছেন তারা সিনেমা চলাকালীন সময়ে অনেক সংলাপে হাততালি দিয়েছেন, শিস বাজিয়েছেন যা দর্শকদের বিনোদিত যেমন করেছে এবং একইসাথে সিনেমার গল্পের সাথে রিলেট করতেও সাহায্য করেছেন। আর এই ডিপার্টমেন্টে নিজের দক্ষতা এবং দর্শকদের চিন্তা-ভাবনার পালস বুঝার ক্ষমতার যে নান্দনিক প্রদর্শন করেছেন শাহজাহান সৌরভ তা প্রশংসার যোগ্য। সংলাপে চিত্রনাট্যের চাহিদা অনুযায়ী কখনো কমেডি, কখনো আবার রোমান্সে ভরপুরতা৷ কখনো সাসপেন্স আবার কখনো অ্যাকশন বা ভায়োলেন্সের দৃশ্যে গালাগাল সবই উপস্থিত ছিলো যা সিনেমার গল্পে গতি এনে দিয়েছে নিঃসন্দেহে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এমনিতেই আমাদের দেশে একটা ফিকশনের রাইটারকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়না বেশিরভাগ সময়। সেজন্য অনেক গুণী ও পটেনশিয়ালটি থাকা রাইটার এই জায়গায় কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। অর্থনীতি এবং মনস্তাত্ত্বিক জায়গায় যদি একজন লেখক বা লেখিকা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী নিজেদের পাওনাটুকু না পান তাহলে তারাই বা এই ধারায় নিজেদের সময়, জ্ঞান ব্যয় করবেন কেনো? অনেকে তারপরেও যখন দাঁতে দাঁত চেপে নিজেদের ভালোলাগা এবং ভালোবাসার জায়গায় নিজেদের ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে কাজ চালিয়ে যান। কিন্তু সিনেমার পর্দায় নিজের নাম না দেখতে পাবার কষ্ট এবং অভিমান তাদের এই জায়গাতে কাজ করার আগ্রহ শূন্যর কোঠায় নিয়ে যায় অনায়াসেই।

শাহজাহান সৌরভ ইতিমধ্যে বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যমে চারটি সিনেমায় নিজের লেখার যোগ্যতা নিয়ে হাজির হয়েছেন৷ এবং এখানে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো শাহজাহান সৌরভ যে চারটি সিনেমায় ক্যামেরার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করেছেন সেই চারটি সিনেমাই প্রশংসা এবং আলোচনায় ছিলো। আগের তিনটি সিনেমাতেই সংলাপ রচয়িতা হিসেবে কাজ করলেও ‘পরাণ’ সিনেমায় চিত্রনাট্য এবং সংলাপ দুই ডিপার্টমেন্ট সামলেছেন তিনি। চিত্রনাট্যে রায়হান রাফির সাথে মিলেই কাজ করেছেন ভালো একটা কাজ উপহার দেবার লক্ষ্য নিয়ে। একজন গল্পকার বা সংলাপ রচয়িতা হিসেবে ধারাবাহিক এই ভালো কাজে নিজের সংযুক্ত থাকাটা তার ভালো কিছু করার আগ্রহ এবং ইচ্ছার নির্দশন। আগের তিনটি সিনেমার তুলনায় ‘পরাণ’ নিঃসন্দেহে শাহজাহান সৌরভকে এগিয়ে নিয়ে গেছে অনেকটা পথ। সিনেমার চিত্রনাট্যতে রায়হান রাফির সাথে সমানভাবে সফলতার স্বাদ নিচ্ছেন তিনি। দুই গুণী এবং দর্শকদের পালস বোঝা তরুণের চিন্তা-ভাবনা এবং ভিন্নধর্মী কিছু দর্শকদের উপহার দেবার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে ব্যাপকভাবে। তবে এই সিনেমায় তার লেখা সংলাপের প্রশংসা করেননি এমন কাউকে পাওয়া যাবেনা। প্রতিটা সিনের সাথে চিত্রনাট্যের চাহিদা অনুযায়ী যুতসই সংলাপ যেনো একেবারে সোনায় সোহাগা। সামনের দিনেও চলচ্চিত্রের বিশাল মাধ্যমে শাহজাহান সৌরভ ফুলের সুবাসের মতোই তার লেখনী দিয়ে সৌরভ ছড়িয়ে যাবেন অবিরাম এই কামনা রইলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *