বলিউড থেকে ঢালিউড সব সময় ২০ বছর পিছিয়ে

বলিউড থেকে ঢালিউড সব সময় ২০ বছর পিছিয়ে

অনলাইন ডেস্ক :

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও একটা বক্স অফিস এই দেশে প্রতিষ্ঠা না হবার ব্যর্থতার দায়ভার কারা বহন করবে শুনি? এদেশে বর্তমানে জীবিতদের মধ্যে সবচাইতে সিনিয়র পরিচালক হওয়ার দরুন কিছুটা আমার বাবার কাঁধে বর্তায়, তো তিনি শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম না থাকায় সেটুকু না হয় নিজের কাঁধে নিলাম… কিন্তু বাকিরা কি করবে?

কথায় কথায় যে ভক্তরা প্রিয়া আমার প্রিয়া, এক টাকার বউ, পাসওয়ার্ড, মনপুরা, আয়নাবাজি, ঢাকা অ্যাটাকের মতো ব্লকবাস্টার মুভির কথা টেনে আনার চেষ্টা করেন তারা কি জানেন না যে ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে দেখা যাবে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মাসুদ রানা, সুজন সখী, নয়ন মনি, অশিক্ষিত, উজান ভাটি, ছুটির ঘণ্টা, ভেজা চোখ, বেদের মেয়ে জোছনা, স্বপ্নের ঠিকানা যে লেভেলের ব্লকবাস্টার ছিল এগুলোর কোনোটাই তার ধারে কাছেও নেই। এটা যে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য অশনি সংকেত তা কি কেউ বুঝতে পারে না নাকি বুঝেও বুঝতে চায় না!

যত দিন যাচ্ছে ততই বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের দর্শক কমছে। অনেকেই বলতে পারেন যে নন থিয়েট্রিক্যাল রেভিনিউ দিয়ে মুভির টাকা উঠানো যায়, কিন্তু সিনেমার সাফল্য সব সময় বক্স অফিস কেন্দ্রিক। সেজন্যই কোনো টেবিল লস না থাকা সত্বেও শাহরুখ খানের জিরো একটা বক্স অফিস ডিজাস্টার।

সেইসাথে সিনেমা হলের পরিবেশ নিয়ে কথা তুলতেই হয়। মধুমিতা বাদে ঢাকা শহরের আর কোন সিঙ্গেল স্ক্রিনে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যে মুভি দেখতে পারবে? বাকি শহরের কথা তো বাদই দিলাম। মাল্টিপ্লেক্স এর খরচ সবার সাধ্যে কুলায় না, যতদিন মান সম্মত সিঙ্গেল স্ক্রিনের অভাব থাকবে ততদিন আমাদের ইন্ডাস্ট্রি পিছাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ অবশ্যই প্রয়োজন। সিনেমাকে শিল্প ঘোষণা করলেও সহজ সুদে শিল্প ঋণের ব্যবস্থা কেউ করেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর নিজের হাতে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আবার দাঁড় করিয়েছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন এই দিকে সুদৃষ্টি দেবার জন্য।

এই ঈদে পরাণ ভালো ব্যবসায় করেছে, সামনের সপ্তাহে হাওয়া ভালো রিপোর্ট নিয়ে রিলিজ হচ্ছে… কিন্তু এই অল্প কয়েকটা সিনেমা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি টিকবে না।

আগে একটা কথা প্রচলিত ছিল যে বলিউড যা করবে ২০ বছর পর ঢালিউড তা করবে, অর্থাৎ বলিউড থেকে ঢালিউড সব সময় ২০ বছর পিছিয়ে থাকবে। আপাতদৃষ্টিতে এটা শুনতে বাজে শোনালেও এটাও যদি এখন সত্য প্রমাণিত হয় তবুও তা মন্দের ভালো। ২০০৩ সালে বলিউডের ট্রাঞ্জিশনাল ডিফাইনিং মুভি কোই মিল গ্যায়া রিলিজ হয়েছিল, দেখি ২০২৩ সালে কেউ এরকম কিছু ঢালিউডে বানাতে পারে কি না!

লেখক :
চৌধুরী ফরহাদুজ্জামান,
বিনোদন ও শোবিজ কলামিস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *