শেষ বয়সে কেন বাড়ি ছেড়েছিলেন সুচিত্রা সেন?

শেষ বয়সে কেন বাড়ি ছেড়েছিলেন সুচিত্রা সেন?

অনলাইন ডেস্ক :

টলিউডের মহানায়িকা তিনি। বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির স্বর্ণযুগের নায়িকা সুচিত্রা সেন। মাত্র কয়েক বছর তাকে পেয়েছিল টলিউড। কিন্তু তার মধ্যেই সুচিত্রা নিজের এমন দৃঢ় ছাপ ফেলে দিয়েছেন যে আজও কোনও নায়িকার সামর্থ্য হয়নি সুচিত্রার জনপ্রিয়তাকে টপকানোর। তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মহানায়িকার ব্যক্তিগত জীবন সুখের ছিল না। সেকথা প্রায় সকলেই জানেন।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুচিত্রার বিয়ে হয়েছিল শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে। বিয়ের পর সুচিত্রা অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন। তার বিবাহিত জীবন খুব একটা সুখের ছিল না। টলিউডে গুঞ্জন, সুচিত্রার স্বামী তার উপর ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করতেন। বিয়ের ৭ বছর পর সুচিত্রা-দিবানাথের একমাত্র মেয়ে মুনমুন সেনের জন্ম হয়। মেয়ে এবং কেরিয়ার নিয়েই নিজের আলাদা জগৎ গড়ে তুলেছিলেন সুচিত্রা।

সুচিত্রা তার কেরিয়ারে বেশ ভালোই এগোচ্ছিলেন। তার সমকালীন সময়ের আর কারও সামর্থ্য ছিল না তাকে টেক্কা দেওয়ার। উত্তম এবং সুচিত্রা জুটি মানুষের মনে গেঁথে আছে আজও। কিন্তু উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর তাল কাটলো সুচিত্রার জীবনেরও। ধীরে ধীরে অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী। পুরোপুরি আধ্যাত্মিকতার মধ্যে ডুবে যান তিনি।

সুচিত্রা বরাবরই ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন। ভগবানের উপর তার প্রচুর আস্থা ছিল। দিনে কয়েক ঘন্টা পূজো করতেন নিয়মিত। প্রিয় বন্ধু উত্তম কুমারের মৃত্যুর ধাক্কা তিনি সামলে উঠতে পারেননি। অন্যদিকে সেই সময় বলিউডেও সুচিত্রার জায়গা টালমাটাল ছিল। সুচিত্রা চাইলেই টলিউডে একের পর এক ছবি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি পাকাপাকিভাবে অবসরের পথে হাঁটলেন।

সুচিত্রা সেন রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রামকৃষ্ণ মিশনেরই এক সন্ন্যাসী তাকে পরামর্শ দেন অর্থলোভী না হওয়ার। সুচিত্রাও তার কথা মেনে নেন। বাকি জীবনটা তিনি ক্যামেরা থেকে দূরে ঈশ্বরের সাধনা করেই কাটিয়ে দেন। শোনা যায় শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দিলে রামকৃষ্ণ মিশনেই নাকি একটা ঘর নিয়ে থাকতে শুরু করেন সুচিত্রা। এই ঘরেই নাকি তিনি নিজেকে বন্দী করে রাখতেন। এমনই গুঞ্জন ছিল টলিউডে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *