
অনলাইন ডেস্ক
কোনো রকমের লিংক লবিং ছাড়াও যে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বড় তারকা হওয়া যায় তা প্রমাণ করে দেখিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী । কলকাতা থেকে গিয়ে এক অচেনা অজানা শহরে সহায় সম্বলহীন ভাবে দিনের পর দিন সংগ্রাম করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এক সময় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গেও তুলনা করা হত তাকে।
বলিউডে গিয়ে একটা লম্বা সময় ধরে সংগ্রাম করতে হয়েছিল মিঠুনকে। বলিউডে তাঁর কোন চেনা পরিচিতি ছিল না। এমনকি গায়ের রং কালো বলে পরিচালকরাও অপমান করতেন তাঁকে। তবুও তথাকথিত কোনো গডফাদার ছাড়াই নিজের পরিশ্রম এবং প্রতিভার জোরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন মিঠুন। আশির দশকের সুপারস্টারদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন ‘ডিস্কো কিং’।
এদিকে সে সময়ে বলিউডে অমিতাভের রাজত্ব চলছে এবং একের পর এক ছবিতে নায়ক হয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করছেন তিনি। বিগ বি-র ঔজ্জ্বল্যের সামনে ফিকে পড়ে যাচ্ছিলেন অন্য অভিনেতারা। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন মিঠুন। তিনি তখন অমিতাভের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিনেমায় অভিনয় করে যাচ্ছিলেন। সে সময়েই তিনি তকমা পেয়ে যান ‘গরিবের অমিতাভ বচ্চন’।
এ বিষয়ে পরে একবার মিঠুনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অমিতাভকে ‘শতাব্দীর সেরা তারকা’ আখ্যা দেন এবং তিনি বলেছিলেন, “সে সময়ে বচ্চন সাব সব বড় ব্যানারের সিনেমায় অভিনয় করতেন। আর আমার কাছে তখন কোনো ব্যানারই ছিল না। কিন্তু আমার ছবির বানিজ্য হতো তার ছবির প্রায় কাছাকাছিই। সিনেমাপ্রেমীরা তখন আমাকে বলত, এ-ও অমিতাভ বচ্চন, কিন্তু গরিবের’।
কিন্তু অদ্ভূত সেসময় সিনেমাপ্রেমীদের এমন টিটকারীতে খুশিই হয়েছিলেন মিঠুন। তাঁর কথায়, অমিতাভ অভিনয় করতেন বড় বড় বাজেটের সিনেমায়। আর তিনি করতেন ছোট মাঝারি বাজেটের সিনেমায়। তবে তাদের দুজনের ছবিই বক্স অফিসে প্রায় সমান সমান ব্যবসা করতো। তাই এক সময় দর্শকেরা বলতে শুরু করে অমিতাভ এবং মিঠুন বলিউড ইন্ডাস্ট্রির দুই স্তম্ভ। দর্শকের এমন প্রশংসা ছিল মিঠুনের কাছে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
অমিতাভ ও মিঠুনের মধ্যে দীর্ঘ ৪৫ বছরের বন্ধুত্ব। একসঙ্গে ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে কাজও করেছেন তাঁরা। বিগ বি এবং মিঠুনের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে বাবার কেরিয়ারের শুরুর দিককার এক ঘটনা জানিয়েছিলেন নমশি চক্রবর্তী। ‘তারানা’ ছবির শুটিংয়ের সময়ে মিঠুনকে প্রোডাকশনের টেম্পো করে যেতে দেখে নিজের গাড়িতে লিফট দিতে চেয়েছিলেন অমিতাভ। মেগাস্টারকে বরাবর শ্রদ্ধার চোখে দেখে এসেছেন মিঠুন।